আপনি ইমেইল পাঠাচ্ছেন কিন্তু ইনবক্সে না গিয়ে স্প্যাম ফোল্ডারে যাচ্ছে? এর ফলে আপনার ইমেইলগুলো কেউ দেখেনা এবং সেলস ও জেনারেট হচ্ছেনা। হয়তো আপনি নিজেও স্প্যাম ফোল্ডার চেক করেন না।

কিভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়? ইমেইল স্প্যাম ফোল্ডার এড়ানো এবং ইনবক্সে পৌঁছানোর জন্য বেশ কিছু বিষয়ে আপনাকে নজর রাখতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে:

  1. ইমেইল ইম্পোর্ট করা থেকে বিরত থাকুন
  2. ডাবল অপ্ট-ইন সাবস্ক্রাইবার নিন
  3. ফ্রি ইমেইল ব্যবহার এড়িয়ে চলুন
  4. ইমেইলের টেক্সট ভার্সন তৈরি করুন
  5. স্প্যাম ট্রিগার শব্দ এড়িয়ে চলুন

এই বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যেই অটোরেসপন্ডার সেবা ব্যবহার করেন না কেন বা SMTP ব্যবহার করেও যদি ইমেইল পাঠান, এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলে আপনার ইমেইল স্প্যাম ফোল্ডারে কম যাবে।

“ইমেইল মার্কেটিং স্প্যাম প্রতিরোধ” কৌশলসমূহ:

১. ইমেইল ইম্পোর্ট করা থেকে বিরত থাকুন

ইমেইল স্প্যাম ফোল্ডার এড়াতে হলে, আমার পরামর্শ হলো নিজের ইমেইল লিস্ট তৈরি করা। এতে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে, যাদের কাছে ইমেইল পাঠাচ্ছেন, তারা সবাই তা পেতে আগ্রহী। অন্যের কাছ থেকে ইমেইল লিস্ট নিয়ে কাজ করলে অনেক সময় ইমেইলগুলো স্প্যাম ফোল্ডারে চলে যেতে পারে।

নিজের ইমেইল লিস্ট তৈরি করা খুবই জরুরি, কারণ এতে আপনার ইমেইল পাঠানোর ফলাফল ভালো হয়। যেসব মানুষ নিজের ইচ্ছায় সাবস্ক্রাইব করেছে, তারা আপনার ইমেইল খুলবে এবং দেখবে। অন্যদের থেকে ইমেইল ঠিকানা নিয়ে পাঠালে সেই ইমেইলগুলো প্রায়ই বাউন্স করে বা স্প্যাম হিসেবে রিপোর্ট হতে পারে।

এ কারণে আমি সবসময় চেষ্টা করি আমার নিজের ইমেইল লিস্ট তৈরি করতে। এজন্য আমি ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ফর্ম দিয়ে মানুষকে সাবস্ক্রাইব করার সুযোগ দিই। এতে করে যারা আমার ইমেইল পেতে চায়, তারা নিজেরাই ইচ্ছা করে আমার ইমেইল লিস্টে যোগ হয়।

যখন কেউ সাবস্ক্রাইব করে, আমি তাদেরকে একটি নিশ্চিতকরণ ইমেইল পাঠাই। এতে তারা নিশ্চিত করতে পারে যে তারা সত্যিই ইমেইল পেতে চায়। এই পদ্ধতিটা ইমেইল যাচাই করারও একটি ভালো উপায় এবং এটা আমার লিস্টকে সঠিক ও পরিষ্কার রাখে।

নিজের ইমেইল লিস্ট তৈরি করলে স্প্যাম রিপোর্ট কমে যায়, বাউন্স রেটও কম হয়। আর যারা ইমেইলগুলো পড়বে, তারা আসলেই আপনার কনটেন্ট দেখতে আগ্রহী থাকবে। এভাবে আপনি স্প্যাম ফোল্ডারে পড়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে ফেলতে পারবেন।

২. ডাবল অপ্ট-ইন সাবস্ক্রাইবার নিন

ডাবল অপ্ট-ইন পদ্ধতি ব্যবহার করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যখন তুমি আমার ইমেইল লিস্টে যোগ দেওয়ার জন্য নাম লেখাও, তখন আমি তোমাকে একটি নিশ্চিতকরণ ইমেইল পাঠাই। এই ইমেইলে একটি লিঙ্ক থাকবে, যেটিতে ক্লিক করে তোমাকে তোমার ইচ্ছা নিশ্চিত করতে হবে।

এই পদ্ধতিটি আমার ইমেইলগুলোকে স্প্যাম ফোল্ডার থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। কারণ শুধুমাত্র যাঁরা সত্যিই ইমেইল পেতে চান, তাঁরা এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেন। এতে করে অযাচিত ইমেইল পাঠানোর সম্ভাবনা কমে যায়।

ডাবল অপ্ট-ইন ব্যবহার করলে আমি অকার্যকর ইমেইল ঠিকানাগুলোও এড়াতে পারি। যদি তুমি ভুলভাবে ইমেইল ঠিকানা লিখো, তবে তুমি নিশ্চিতকরণ ইমেইল পাবে না। ফলে আমার ইমেইল লিস্ট পরিষ্কার ও কার্যকরী থাকে।

এই পদ্ধতির আরেকটি বড় সুবিধা হলো, এতে আমার এবং তোমার মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত হয়। যখন তুমি নিশ্চিত করো যে তুমি ইমেইল পেতে চাও, তখন তুমি আমার ইমেইলগুলো পড়ার জন্য আরও আগ্রহী হও।

৩. ফ্রি ইমেইল ব্যবহার এড়িয়ে চলুন

আমি সবসময় চেষ্টা করি ফ্রি ইমেইল সার্ভিস ব্যবহার না করার জন্য। যেমন গুগল, ইয়াহু বা অন্য কোনো ফ্রি ইমেইল সার্ভিস ব্যবহার করার পরিবর্তে, আমি কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করি। কাস্টম ডোমেইন মানে হলো, তোমার নিজস্ব নামে একটি ইমেইল ঠিকানা, যেমন: info@yourwebsite.com

ফ্রি ইমেইল সার্ভিসগুলি সাধারণত স্প্যাম ফিল্টারে বেশি সনাক্ত হয়। যখন আমি ফ্রি ইমেইল ব্যবহার করি, তখন স্প্যাম ফোল্ডারে পড়ার সম্ভাবনা বাড়ে। কারণ, অনেকেই ফ্রি ইমেইল থেকে আসা ইমেইলগুলোকে সন্দেহজনক মনে করেন এবং সেগুলো স্প্যাম হিসেবে রিপোর্ট করেন।

কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করলে আমার ইমেইলগুলো আরও পেশাদার দেখায়। যখন তুমি একটি কোম্পানির ইমেইল ঠিকানা পাবে, তখন সেটি মনে রাখতে এবং বিশ্বাস করতে সহজ হয়। এতে গ্রাহকদের মনে আমার ব্র্যান্ডের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পায়।

এছাড়া, কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করলে আমি ইমেইল ম্যানেজমেন্টে আরও নিয়ন্ত্রণ পেতে পারি। যেমন, আমি সহজে বিভিন্ন বিভাগে ইমেইল তৈরি করতে পারি, যেমন sales@yourwebsite.com বা support@yourwebsite.com। এতে আমার কাজ আরও সহজ হয় এবং গ্রাহকরা প্রয়োজন অনুসারে সঠিক বিভাগে পৌঁছাতে পারে।

তাহলে, তুমি যখন ইমেইল মার্কেটিং করো, ফ্রি ইমেইল ব্যবহার না করার চেষ্টা করো। কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করে তোমার ইমেইলগুলোকে স্প্যাম ফোল্ডার থেকে দূরে রাখবে এবং পেশাদারিত্ব বাড়াবে।

৪. ইমেইলের টেক্সট ভার্সন তৈরি করুন

আমি যখন ইমেইল পাঠাই, তখন HTML ইমেইলের পাশাপাশি একটি সাধারণ টেক্সট ভার্সন তৈরি করতে ভুলিনা। এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ টেক্সট ভার্সন ইমেইল ডেলিভারেবিলিটি উন্নত করতে সাহায্য করে। যদি কোনো কারণে HTML ইমেইলটি সঠিকভাবে না খোলে, তাহলে গ্রাহক টেক্সট ভার্সন পেতে পারে।

টেক্সট ভার্সন যোগ করলে স্প্যাম ফিল্টার প্রতিরোধ করাও সহজ হয়। অনেক সময় ফিল্টারগুলি HTML ইমেইলগুলোকে সন্দেহজনক হিসেবে গণ্য করে। কিন্তু যখন একটি সাদামাটা টেক্সট ভার্সন থাকে, তখন এটি স্প্যাম ফোল্ডারে পড়ার সম্ভাবনা কমায়।

এছাড়া, টেক্সট ইমেইলগুলো সাধারণত দ্রুত লোড হয় এবং যেকোনো ডিভাইসে ভালো দেখা যায়। এমনকি যদি কেউ মোবাইল বা পুরনো ডিভাইস ব্যবহার করে, তখনও তারা টেক্সট ইমেইলগুলো সহজে পড়তে পারে।

আমি চেষ্টা করি টেক্সট ভার্সনে মূল তথ্যগুলো পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করতে। এতে করে গ্রাহক সহজেই বুঝতে পারে আমি কী জানাতে চাইছি। সুতরাং, তুমি যখন ইমেইল পাঠাবে, টেক্সট ভার্সন অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলোনা। এটি তোমার ইমেইলের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করবে এবং গ্রাহকদের সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে।

৫. স্প্যাম ট্রিগার শব্দ এড়িয়ে চলুন

আমি যখন ইমেইল লিখি, তখন কিছু নির্দিষ্ট শব্দ ব্যবহার না করার চেষ্টা করি। যেমন “ফ্রি,” “জিতুন,” বা “গ্যারান্টিযুক্ত” শব্দগুলি সাধারণত স্প্যাম ফিল্টারকে ট্রিগার করে। এই শব্দগুলো যদি আমি বেশি ব্যবহার করি, তাহলে আমার ইমেইলটি স্প্যাম ফোল্ডারে চলে যেতে পারে।

স্প্যাম ফিল্টারগুলো এ ধরনের শব্দগুলি খুঁজে বের করতে খুব ভালো। তাই, আমি সেগুলো কম ব্যবহার করার চেষ্টা করি এবং এর পরিবর্তে এমন শব্দগুলো বেছে নিই যা আমার অডিয়েন্সের সাথে সাড়া জাগায়। এতে করে ইমেইল পাঠানোর সময় স্প্যাম ফোল্ডারে যাওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

যখন আমি ইমেইল লেখি, তখন আমি লক্ষ্য রাখি যে আমার ভাষা যেন প্রাসঙ্গিক এবং আকর্ষণীয় হয়। আমি চেষ্টা করি সহজ ও স্বাভাবিক শব্দ ব্যবহার করতে, যা আমার পাঠকদের কাছে ভালোভাবে পৌঁছায়। উদাহরণস্বরূপ, “বিশেষ অফার” বা “সীমিত সময়ের জন্য” এসব শব্দ ব্যবহার করলে আমার ইমেইল অনেক বেশি কার্যকরী হয়।

তাহলে, তুমি যখন ইমেইল লেখো, স্প্যাম ট্রিগার শব্দগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করো। এর ফলে তোমার ইমেইলগুলো স্প্যাম ফোল্ডারে না পড়ে ইনবক্সে পৌঁছাবে, এবং গ্রাহকেরা সহজেই তা পড়তে পারবে।

আরও কিছু কার্যকরী টিপস:

  • ইমেইল অথেনটিকেশন পদ্ধতি ব্যবহার করুন যেমন SPF, DKIM, এবং DMARC। এটি আপনার ইমেইলের বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি করে এবং স্প্যাম ফিল্টার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • ইমেইল রেপুটেশন মনিটর করুন। ভালো রেপুটেশন মানে ভালো ডেলিভারেবিলিটি।
  • ইমেইল লিস্ট ক্লিন করুন নিয়মিত। অকার্যকর বা অপ্রয়োজনীয় ইমেইল ঠিকানাগুলি মুছে ফেলুন।
  • ইমেইল কন্টেন্টের সেরা প্র্যাকটিস অনুসরণ করুন। মানসম্পন্ন এবং প্রাসঙ্গিক কন্টেন্ট তৈরি করুন যা গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে।

আপনার ইমেইল মার্কেটিংকে সফল করার জন্য GetResponse ব্যবহার করুন

আপনার যদি GetResponse এ একাউন্ট না থাকে, এখান থেকে একাউন্ট করে নিতে পারেন। GetResponse ব্যবহার করে আপনি সহজেই আপনার ইমেইল লিস্ট ম্যানেজ করতে পারেন এবং “ইমেইল মার্কেটিং স্প্যাম প্রতিরোধ” কৌশলগুলি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করতে পারেন।

উপসংহার

“ইমেইল মার্কেটিং স্প্যাম প্রতিরোধ” কৌশলগুলি ব্যবহার করে আপনার ইমেইলগুলিকে স্প্যাম ফোল্ডার এড়িয়ে ইনবক্সে পৌঁছাতে পারেন। ইমেইল মার্কেটিং সফল করতে এই ৫টি মূল টিপস এবং অন্যান্য কার্যকরী কৌশলগুলি মেনে চলুন।

আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন: আপনি কি এই টিপসগুলি ব্যবহার করেছেন? আপনার অভিজ্ঞতা কমেন্টে শেয়ার করুন!

Write A Comment